এবার মুসীগঞ্জ শহর লাগোয়া লঞ্চঘাট এলাকায় ধলেশ্বরী নদীর পাড়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের তিন দিনের মাথায় আবারও স্থাপনা নির্মাণ চলছে। কয়েক বছর যাবৎ প্রায় ১ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের নদীর পাড়টি বেদখল করে রেখেছিল স্থানীয় কতিপয় প্রভাবশালীরা। তিন দিন আগে ওই এলাকাসহ বিআইডব্লিউটিএ নদীর সীমানা নির্ধারণ করে প্রায় শতাধিক অবৈধ স্থাপনা গুড়িয়ে দেয়।
তবে হাট লক্ষ্মীগঞ্জ সীমানাধীন ধলেশ্বরীর পাড়ে আবার দখল করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তৈরি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সরেজমিনে রোববার (৩০ জুন) বিকেলে হাট লক্ষ্মীগঞ্জ এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ধলেশ্বরী নদীর পাড় ঘেসে পুনরায় তৈরি করা হচ্ছে একটি জ্বালানি তেলের দোকান। ভাঙনের পূর্বে এই দোকানটি টিন ও কাঠ দিয়ে তৈরি ছিল কিন্তু এখন তা তৈরি করা হচ্ছে ইট-সিমেন্টের প্রাচীর দিয়ে। দোকান মালিকপক্ষ জানান, তারা জায়গাটি লিজ নিয়েছে বিআইডব্লিউটির কাছ থেকে।
এদিকে নদীর পাড়ে ঘুরতে আসা একাধিক দর্শনার্থীরা জানান, এখানে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে আমরা খুবই খুশি হয়েছি। শুনেছি নদীর পাড় দিয়ে হাঁটার রাস্তা হবে। গাছ লাগানো হবে। ভেবেছিলাম পরিবেশটা পার্কের মতো হবে। এর আগে এখানে মানুষের বসার মত কিছু ব্রেঞ্চও বানানো হয়েছে। উচ্ছেদের অংশে আরও কিছু ব্রেঞ্চ বানিয়ে দিলে মানুষ এখানে এসে স্বস্তিতে নিশ্বাস নিতে পারতো। তবে হতাশ হয়েছি আবার দখল দেখে।
ধলেশ্বরী নদী পাড়ে ঘুরতে আসা নাফিজ হোসাইন বলেন, মুন্সীগঞ্জ জেলা শহরের একটু বসার কোনো স্থান নেই। আমরা একটু বসার জন্য নদীর পাড়ে আসি। এখানে দোকান-পাটের জন্য বসাতো দূরের কথা হাঁটার জায়গাই থাকে না। তবে দুইদিন আগে নদী কর্তৃপক্ষ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছে। আমরা চাই এখানে বসার জায়গা নির্মাণ ও গাছ লাগিয়ে সুন্দর করে পার্ক এর মতো করা হোক। শহরবাসী অবসরে এখানে সময় কাটাতে পারবে।
এদিকে মুন্সীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট শহীদ-ই-হাসান তুহীন বলেন, দুই দিন না যেতে যেতেই আবার ধলেশ্বরীর পার দখল করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে। এটা আসলেই দুঃখজনক। আজ এই দোকানটা তৈরি হলে, পর্যায়ক্রমে অন্যান্য দোকান গুলোও তৈরি হয়ে যাবে। এর মানে আবারও সেই দখল। উচ্ছেদ হওয়া স্থানে একটি পার্ক তৈরি করা হলে ছোট এই শহরের মানুষ একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতে পারতো।
এ সময় জ্বালানি তেল প্রতিষ্ঠানটির মালিক মো. শাহাজালাল মিয়ার শ্যালক মো. আফসু বলেন, আমার দুলাভাই অন্ততপক্ষে ১০ বছর আগে এই জায়গা বিআইডব্লিউটিএর কাছ থেকে লিজ নিয়েছে। কয়েকদিন আগে উচ্ছেদ অভিযানে অন্যান্য দোকান ভাঙার সময় এই তেলের দোকানটি ভেঙে যায়। তাই আবার নতুন করে দোকানটি নির্মাণ করা হচ্ছে।
এদিকে বিআইডব্লিউটিএর নারায়ণগঞ্জ উপ-পরিচালক মো. মোবারক হোসেন মজুমদার বলেন, আমরা তাদের কাগজ পত্র নিয়ে যোগাযোগ করতে বলেছি। তাদের কি আছে, কতটুকু আছে এবং নতুন করে লাইসেন্স দেওয়া যায় কি না তা বিবেচনা করা হবে। কিন্তু ওনারা আমাদের নির্দেশনা না মেনে কাজ করলে তা অবৈধ।